
নারায়নগঞ্জ নিউজ এক্সপ্রেস :
২০২৪ সালে হওয়া ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর সারাদেশের মত নারায়ণগঞ্জ থেকেও পালিয়ে যায় ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ ও তাদের দোসর জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা। তবে ব্যক্তিক্রম আছে শুধু বন্দর উপজেলার মুছাপুর ইউনিয়ন এলাকায়। এখানে গত ১ বছরে জাতীয় পার্টি করা একটি সন্ত্রাসী পরিবারের নেতৃত্বে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের ৪জন পদধারী নেতার উপর হামলা চালিয়ে তাদেরকে গুরুতর আহত করা হয়েছে। চালানো হয়েছে তাদের বাড়িঘরে ভাঙচুর। এসব ঘটনায় থানায় অভিযোগ হলে রহস্যজনক কারণে পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে কোন প্রকার ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। বরং তারা বীরদর্পে এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছে। তাদের ভয়ে এখনো আতঙ্কিত থাকে বিএনপি নেতা।
তারা হলেন মুছাপুর ইউনিয়নের লাঙ্গলবন্দ এলাকার শিহাবউদ্দিন মেম্বারের সন্ত্রাসী পুত্র , ইকবাল, দেলোয়ার, মনোয়ার, কন্যা লেডি সন্ত্রাসী লাভলী বেগম। তাদের সহযোগি হিসেবে আছেন লেডি সন্ত্রাসী লাভলী বেগম এর স্বামী আমান উল্লা,আওয়ামী যুবলীগ এর ক্যাডার বাহাউদ্দীন।
একটি সূত্র জানায় এই সন্ত্রাসী পরিবারটিকে বর্তমানে আগলে রেখেছে মহানগর বিএনপির আহŸায়ক কমিটির সদস্য ও মুছাপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শাহিন আহম্মেদ।
গত ৫ আগস্টের পর এই পরিবারের দ্বারা হামলার শিকার হওয়া বিএনপি নেতারা হলেন, মুছাপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি তারা মিয়া, মুছাপুর ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি জাহিদ হাসান পাপ্পু, বন্দর উপজেলা কৃষকদলের সাধারণ সম্পাদক সেলিম মাহমুদ ও সবশেষ লাঙ্গলবন্দ বাজারে প্রাণঘাতি হামলা চালিয়ে গুরুতর জখম করা হয় বিএনপি নেতা তাওলাদ মাহমুদকে। এছাড়াও তার বাড়িঘরে হামলা ভাঙচুর ও লুটপাট চালিয়েছে এই সন্ত্রাসী পরিবারটি।
এই ঘটনার তাওলাদ মাহমুদ বাদী হয়ে বন্দর থানায় পৃথক দুটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করলেও পুলিশ এখন পর্যন্ত উক্ত ঘটনায় কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি।
এ ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে বন্দর উপজেলা বিএনপির পক্ষ থেকে আসামিদের গ্রেপ্তার করতে ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেয়া হলেও এখন পর্যন্ত পুলিশের কোন কার্যকর পদক্ষেপ লক্ষনীয় হয়নি।
উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের ১ ডিসেম্বর বন্দরে সেচ প্রকল্পে মিথ্যা চাঁদাবাজির অভিযোগ তুলে মুছাপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি তারা মিয়া, যুবদল সভাপতি জাহিদ হাসান পাপ্পু ও ধামগড় ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি জাহিদ খন্দকারকে পিটুনি দিয়ে পানিতে চুবায় ইকবাল, দেলোয়ার, মনোয়ার, লাভলী গং রা। ওই সময় তাদেরকে নেপথ্যে থেকে আশ্রয় প্রশ্রয় দিয়ে ছিলেন বিএনপি নেতা ও মুছাপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শাহিন আহম্মেদ। সভাপতির সাথে তার রাজনৈতিক বিরোধ থাকার সুবাধে আওয়ামী দোসদের তারা মিয়া ও জাহিদ হাসান পাপ্পুকে শায়েস্তা করিয়েছেন এমনটাই গুঞ্জন ছিল।
২০২৫ সালের ১১মার্চ মুছাপুর ইউনিয়ন এলাকায় মডেল গ্রæপের দেওয়া মাংস অসহায় দরিদ্রদের মাঝে বিতরণ বাধা ও বিতরণ শেষে ফেরার পথে বন্দর উপজেলা কৃষকদলের সাধারণ সম্পাদক সেলিম মাহমুদের উপর হামলা চালানো হয়।এ ঘটনায় মো. সেলিম বাদী হয়ে বন্দর থানায় ৫ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত আরো ২০/২৫জনকে আসামি করে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেলেও তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।
সবশেষ ২৮ অক্টোবর লাঙ্গলবন্দ বাজারে ইউপি সদস্য মনোয়ার হোসেন ও তার বোন আরেক ইউপি সদস্য লাভলী বেগমের নেতৃত্বে বিএনপি নেতা তাওলাদ হোসেনের উপর হামলা চালিয়ে তাকে গুরুতর আহত করা হয়। পরদিন তার বাড়িতে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়। এ ঘটনা আহত বিএনপি নেতা বন্দর থানায় পৃথক দুটি অভিযোগ দায়ের করলেও একটি মামলায় রূপান্তর হয় অপরটি অভিযোগ আকারে তদন্তাধীন থাকলে পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়নি।
গুঞ্জন রয়েছে এ ঘটনার পেছনেও রয়েছে মুছাপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শাহিন আহম্মেদ কলকাঠি নাড়ছে। তাদের গ্রেপ্তার থেকে বাঁচাতে এবং মামলা থেকে জামিন পেতে সার্বিক সহযোগিতা ও জোড় তদবির চালিয়ে যাচ্ছেন শাহিন আহম্মেদ।
আপনার মতামত লিখুন :