নারায়ণগঞ্জে সরকারি মেডিকেল কলেজ চাই: সম্মেলনে ছাত্র ফেডারেশন


Kamrul Islam Sohel প্রকাশের সময় : সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২৫, ৭:২৯ অপরাহ্ন / ১০০০
নারায়ণগঞ্জে সরকারি মেডিকেল কলেজ চাই: সম্মেলনে ছাত্র ফেডারেশন

নারায়ণগঞ্জে বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের নবম জেলা সম্মেলনের উদ্বোধন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বেলা ১২টায় নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে উদ্বোধনী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

ছাত্র সংগঠনটির জেলা সভাপতি ফারহানা মানিক মুনার সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সৃজয় সাহার সঞ্চালনায় ২ দিনের এই সম্মেলনের উদ্বোধন করেন কেন্দ্রীয় সভাপতি মশিউর রহমান রিচার্ড।

জাতীয় সঙ্গীতের সাথে জাতীয় পতাকা ও সাংগঠনিক পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে সম্মেলনের উদ্বোধন ঘোষণা করা হয়।

উদ্বোধনী বক্তব্যে ছাত্রনেতা মশিউর রহমান রিচার্ড বলেন, “অভ্যুত্থানের পর নতুন বিপ্লবের সূচনার ক্রান্তিলগ্নে নবম জেলা সম্মেলনের ডাক দিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের নারায়ণগঞ্জ জেলা। অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে জালিমের পতন হলেও জালিমের সেই ব্যবস্থা রয়ে গেছে। অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ছাত্রদের যে আকাঙ্খা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মাধ্যমে তা এখনো বাস্তবায়ন হয় নাই। পথশিশু এখনো অধিকার বঞ্চিত, শিক্ষা বঞ্চিত, শিক্ষাখাতে নাই কোনো বরাদ্দ। যে নীতি হাসিনা এবং পূর্ববর্তী শাসকরা তৈরি করে গেছেন, গণঅভ্যুত্থানের দেড় বছর পরেও তার কোনো পরিবর্তন হয় নাই।”

“শিক্ষা শেষে শিক্ষার্থীদের চাকরির কোনো নিশ্চয়তা এই সরকার দিতে পারে নাই। আমরা দেখছি, তারা বাংলাদেশের মানুষের জাতীয় স্বার্থকে বিসর্জন দিচ্ছে, তারা নিজেদের নগদ-নারায়ণ প্রাপ্তির লক্ষ্যে শিক্ষার্থীদের স্বার্থকে বিসর্জন দিচ্ছে। তারা কর্মজীবী ও শ্রমজীবী মানুষের স্বপ্নকে পদদলিত করছে।”

জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচার নিয়ে মানুষের ‘সন্দেহ তৈরি হয়েছে’ মন্তব্য করে এ ছাত্রনেতা আরও বলেন, “যারা ১৫ বছর দেশের মানুষকে জিম্মি করে ভারতের দাসত্ব করেছে, আজকে সেই আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের চেষ্টা চলছে। আমরা দেখছি, দল পাল্টালেই আওয়ামী লীগ দোসররা হেদায়েতপ্রাপ্ত হয়ে যাচ্ছে। এই মুনাফেকি রাজনীতি অভ্যুত্থানের শহীদদের রক্তের সাথে বেইমানি। বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠিত দল এবং নতুন দলগুলোও এই অনুশীলনের ধারাই অব্যাহত রাখছে। সুতরাং এই রাবনের লঙ্কাকে পরিবর্তন করতে হলে আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। জনগণের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে, জবাবদিহিতা থাকতে হবে শাসনে।”

দেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয়-কলেজে ছাত্রছাত্রী সংসদ নির্বাচন আয়োজনের দাবি জানান তিনি। একইসাথে নারায়ণগঞ্জে একটি পূর্ণাঙ্গ সরকারি মেডিকেল কলেজ স্থাপনেরও দাবি জানান।

সভাপতির বক্তব্যে ফারহানা মানিক মুনা বলেন, “আওয়ামী শাসনে দাড়িয়েও ছাত্র ফেডারেশন গণতান্ত্রিক ক্যাম্পাস নির্মাণের জন্য লড়াই করছে। রাষ্ট্র যখন ভেঙে পরে তখন তার অভ্যন্তরীন শিক্ষা, চিকিৎসা কিংবা অন্যান্য কোনো নাগরিক ব্যবস্থাপনাই আগাতে পারেনা। ফলে পুরো শিক্ষা ব্যবস্থা এক দলীয়পনায় নিয়োজিত হয়েছে। যা থেকে পরিত্রানের জন্য অভ্যুত্থান আবশ্যক ছিল। কিন্তু রাষ্ট্রকে সম্মুনত করে গড়ে তোলার নিয়ামক শিক্ষা ব্যবস্থার পুনর্গঠন স্বল্প সময়ের কাজ নয়।”

মুনা বলেন, “সকল বৈষম্যের বিপরীতে নারায়ণগঞ্জের প্রত্যেক শিশুর শিক্ষা নিশ্চিতে, কিশোর গ্যাং নামক অপরাজনীতির কবল থেকে কিশোরদের রক্ষা করে শহরের শক্তিতে রূপান্তরের লক্ষ্যে ছাত্র ফেডারেশন তার লড়াইয়ে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।”

সমাবেশ শেষে শহীদ মিনার থেকে র‌্যালি বের করেন ছাত্র সংগঠনটির নেতা-কর্মীরা। র‌্যালিটি চাষাঢ়ায় জেলা পরিষদের ডাক-বাংলোর সামনে গিয়ে শেষ হয়।