
নারায়নগঞ্জ নিউজ এক্সপ্রেস :
আড়াইহাজারে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে স্থানীয় বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ৬ জন গুলিবিদ্ধসহ ৩০ জন আহত হয়েছেন।
আহতদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
আজ শনিবার (১৮ অক্টোবর) সকালে উপজেলার মেঘনাবেষ্টিত কালাপাহাড়িয়া ইউনিয়নের খালিয়ারচর এলাকায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষ চলাকালে উভয় পক্ষ ককটেল বিস্ফোরণ, গুলি বিনিময় ও দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে একে অপরের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এতে পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।
আড়াইহাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার নাসির উদ্দিন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, “বর্তমানে পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। যে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কালাপাহাড়িয়া ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতি কবির হোসেন ও ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি ফকির জহিরুল ইসলামের অনুসারীদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় আধিপত্য নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। সম্প্রতি কবির হোসেন তার বলয় শক্তিশালী করতে ইউনিয়ন যুবলীগের সহ-সভাপতি দেলোয়ার হোসেনের অনুসারীদের দলে ভেড়ান। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা আরও বৃদ্ধি পায়।
শুক্রবার বিকেলে জহিরুল ইসলামের অনুসারীদের সঙ্গে কবিরের লোকজনের বাগবিতণ্ডার এক পর্যায়ে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। এরই ধারাবাহিকতায় শনিবার সকালে খালিয়ারচর পশ্চিমপাড়া ফকিরবাড়ি জামে মসজিদের সামনে দুই পক্ষের শতাধিক নেতাকর্মী দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় গুলিবিনিময়ও হয়।
সংঘর্ষের সময় স্থানীয়রা আতঙ্কে চারদিকে ছুটোছুটি করে। খবর পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে এলাকাজুড়ে এখনও উত্তেজনা বিরাজ করছে।
আহতদের মধ্যে রয়েছেন—খায়ের উদ্দিন (৪২), আব্দুল মতিন (৫০), জোনায়েত মিয়া (২৫), কালু মিয়া (৩৭), খলিলুর রহমান (৪০), আল আমিন (২৫), রশিদ মিয়া (৫০), মনির হোসেন (৩৫), মজিবুর রহমান (৫০), সালাউদ্দিন মিয়া (৩৫), বিল্লাল হোসেন (৩৫), শুভ মিয়া (২৫), জুনায়েদুর রহমান জুনায়েত (২৫), রাজীব মিয়া (১৫), আহাদ মিয়া (১৮), তামিম মিয়া (১৪), আব্দুর রহিম (৪৫), আলমগীর হোসেন (৪২), স্বপন মিয়া (৪০), আমির আলী (৬০), জমির আলী (৫০) ও রাফি মিয়া (২৪)।
এর মধ্যে গুলিবিদ্ধ খায়ের উদ্দিন, আব্দুল মতিন, জোনায়েত মিয়া, কালু মিয়া, খলিলুর রহমান ও আল আমিনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিদের আড়াইহাজার, সোনারগাঁও, হোমনা ও মেঘনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
ফকির জহিরুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, “হত্যা মামলার আসামিরা জামিন না নিয়েই এলাকায় প্রবেশের চেষ্টা করে, এতে এলাকাবাসী বাধা দিলে সংঘর্ষ হয়।”
অন্যদিকে, কবির হোসেন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “কোনো কারণ ছাড়াই জহিরের লোকজন আমাদের ওপর হামলা চালিয়েছে।”
এ ঘটনায় এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
আপনার মতামত লিখুন :